একটি নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মস্তিষ্কবিহীন এককোষী প্রাণী এবং মানবদেহের কোষও ‘শেখার’ ক্ষমতা রাখে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এবং স্পেনের সেন্টার ফর জিনোমিক রেগুলেশনের গবেষকরা এ বিষয়ে প্রমাণ পেয়েছেন।
গবেষণায় বলা হয়, কোষে হ্যাবিচুয়েশন নামক একটি প্রক্রিয়া দেখা গেছে। এটি এমন একটি সরল শেখার প্রক্রিয়া যেখানে বারবার উদ্দীপনায় প্রতিক্রিয়া হ্রাস পায়। যেমন, ঘড়ির টিকটিক শব্দ উপেক্ষা করার ক্ষমতা। এটি ভয় জয় করতেও সহায়তা করতে পারে।
গবেষণায় আরও উঠে এসেছে, এককোষী অ্যামিবা ও মানব কোষ হ্যাবিচুয়েশনের বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করতে পারে। গবেষণাপত্রটি ‘কারেন্ট বায়োলজি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষণার প্রধান জেরেমি গুনাওয়ার্ডেনা বলেন, কোষ কীভাবে মস্তিষ্ক ছাড়াই এমন জটিল প্রক্রিয়া সম্পাদন করে, তা আমাদের জন্য একটি নতুন রহস্য। গবেষণায় দেখা গেছে, এককোষী প্রাণী সিলিয়েট চুলের মতো গঠন ব্যবহার করে চলাফেরা ও খাবার সংগ্রহে সক্ষম এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে এড়ানোর আচরণ প্রদর্শন করে।
গবেষণায় কোষের ভেতরের অণুগুলোর প্রতিক্রিয়া বিশ্লেষণে কম্পিউটার মডেলের সাহায্য নেওয়া হয়। এতে চারটি অণু নেটওয়ার্কের মধ্যে প্রাণীর মস্তিষ্কে দেখা যাওয়া হ্যাবিচুয়েশনের বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। এর মধ্যে দুটি মেমোরি সঞ্চয়ের ধরন ছিল, যার একটি দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।
গবেষকরা মনে করেন, কোষের এই ‘মনে রাখার’ ক্ষমতা ক্যান্সার কোষের কেমোথেরাপি প্রতিরোধ বা ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের কারণ ব্যাখ্যা করতে পারে। তবে এই সম্ভাবনাগুলো বাস্তব জীবনের তথ্যের মাধ্যমে আরও পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
এই আবিষ্কার কোষের মৌলিক শেখার এবং মেমোরি প্রক্রিয়ার ধারণায় এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তথ্যসূত্র: হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুল এবং সেন্টার ফর জিনোমিক রেগুলেশন গবেষণাপত্র।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল