আর মাত্র দুই দিন পর শুরু হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্ট লড়াই। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি হবে নর্থ সাউন্ডের স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে। ৩০ নভেম্বর থেকে দ্বিতীয় ম্যাচ হবে কিংসটনের সাবিনা পার্কে। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে এবং তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজেও মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওয়ানডে সিরিজ হবে সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে। টি-২০ সিরিজ হবে সেন্ট ভিনসেন্টের আরনোস ভেল স্টেডিয়ামে। ফুল স্কেল এ সিরিজের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন টাইগাররা। দুই দিনের ম্যাচে ঝালিয়ে নিয়েছেন ব্যাটিং ও বোলিং। ব্যাট হাতে টপ অর্ডার ভালো না করলেও মিডল অর্ডার মোটামুটি ভালোই করেছে প্রস্তুতি ম্যাচে। বোলারদের প্রস্তুতিও খুব ভালো হয়েছে।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ পরাজয়ের পর আরব আমিরাতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সেখানেও ব্যর্থতা। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হেরে যায় ২-১ ব্যবধানে। একটি ম্যাচ জিতলেও বাকি দুটিতে হতাশাজনকভাবেই হেরে যান টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডেতে ব্যর্থ হন ব্যাটাররা। তৃতীয় ওয়ানডেতে ব্যর্থ বোলাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরাজয় অশনিসংকেতই ছিল মেহেদি হাসান মিরাজদের জন্য। পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার চ্যালেঞ্জই নিতে হবে ক্রিকেটারদের।
দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথম দিনে ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। ২৫৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন টাইগাররা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ একাদশ ব্যাটিংয়ে নামলে বোলারদের প্রস্তুতি শুরু হয়। পেসার ও স্পিনাররা ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন। হাসান মাহমুদ ১৫ রানে ২টি ও তাসকিন আহমেদ ২১ রানে ২টি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া পেসার শরিফুল ইসলাম শিকার করেন ১২ রানে ১ উইকেট। স্পিনাররাও নিজেদের দক্ষতা ঝালাই করে নিয়েছেন। মাত্র ১.৪ ওভার বোলিং করে টানা ৩ উইকেট পেয়ে হ্যাটট্রিক করেন হাসান মুরাদ। হাসান মুরাদের এখনো টেস্টে অভিষেক হয়নি। তিনি কেবল দুটি টি-২০ ম্যাচ খেলেছেন এশিয়ান গেমসে। এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই অভিষেক হয়ে যেতে পারে এ স্পিনারের। ফার্স্ট ক্লাস ও লিস্ট এ ক্রিকেটে বেশ নাম কুড়িয়েছেন ২৩ বছরের এ তরুণ। বাঁ হাতি স্পিনার হিসেবে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে শিকার করেছেন ১৩৯ উইকেট। লিস্ট এ ক্রিকেটেও আছে ৮৫ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও ভালো করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
বল হাতে নিজেদের ঝালাই করে নিয়েছেন অভিজ্ঞ পেসার তাসকিন ও শরিফুল। তা ছাড়া অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বল আর ব্যাটে দারুণ প্রস্তুতি নিয়েছেন। প্রস্তুতি পর্ব শেষ। এবার আসল লড়াইয়ের অপেক্ষা। ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গিয়ে ২০০৯ সালের পর টেস্টে আর সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে টাইগাররা ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করেছিল তাদেরই মাঠে। বহু বছর পর কি আটলান্টিকের ওপারে জয়ের দেখা মিলবে? প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো করে স্বপ্নটা বড় করেছেন টাইগাররা। এ স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন মেহেদি হাসান মিরাজরা? অবশ্য এ সময়ের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গিয়ে ওয়ানডেতে পাঁচবার জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডের এসব জয় বেশ দাপটের সঙ্গেই পেয়েছেন টাইগাররা। টি-২০ ক্রিকেটে এখনো ক্যারিবীয় মাটি জয় করতে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সে সুযোগও অপেক্ষা করছে।