আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের মতামতের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন : আইন মন্ত্রণালয়ের কৈফিয়ত’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলনে আইন মন্ত্রণালয়ের বিগত ১০০ দিনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন আইন উপদেষ্টা। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে ট্রাইব্যুনালের মতামতের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করব। তাদের সঙ্গে আমাদের বন্দিবিনিময় চুক্তি রয়েছে। তবে স্বাধীন ট্রাইব্যুনালের কাজে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না। সে ক্ষেত্রে চূড়ান্ত রায় লাগবে কি না, এমন প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, বিচারের যে কোনো পর্যায়েই এটা করা যায়। রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন হবে না। আরেক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সরকার আওয়ামী লীগের মতো দমন-পীড়ন চায় না। অযৌক্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে নানা দুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকার বিষয়গুলো দেখছে। কঠোর হলে সরকার ভালোভাবেই কঠোর হবে। আসিফ নজরুল বলেন, গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন দমনে দায়ের করা প্রায় সব ফৌজদারি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ বাতিল করে কম্পিউটার সম্পর্কিত অপরাধগুলো প্রতিরোধের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন ‘সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪’ প্রণয়নের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সাইবার নিরাপত্তা আইন রহিত হলে ওই আইনের অধীনে দায়ের করা সব স্পিচ-অফেন্সের মামলা প্রত্যাহার করা হবে। তবে হ্যাকিং বা কম্পিউটার অপরাধ সংক্রান্ত মামলাগুলো চলমান থাকবে। তিনি বলেন, গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ অনুসমর্থনে আইন মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সহায়তা করেছে। স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্রস্তাব দ্রুতই প্রস্তুত করবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমরা চাই না- আগের মতো কোনো ভুয়া নির্বাচন হোক। আর এটাও চাই না, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে কেউ আবার ভুয়া নির্বাচন করার সুযোগ পাক। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের পেশায় ফিরে যাওয়ার জন্য আগ্রহী।