অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে। আমরা তো চাই, সরকার সাফল্য অর্জন করুক। তাদের সাফল্য মানে আমাদের সাফল্য। তারা ব্যর্থ হলে আমরা ব্যর্থ হব। আমরা চাই না শেখ হাসিনা আবার ফিরে আসুক। আওয়ামী লীগের দুঃশাসন আবার ফিরে আসুক। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি) আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। সভাটি সঞ্চালনা করেন পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব ও বিএফইউজের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী। বক্তব্য দেন বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সাবেক সভাপতি প্রফেসর ড. আজিজুল হক, ড্যাবের সভাপতি ড. হারুন আল রশীদ, প্রফেসর ড. আবু আহমেদ প্রমুখ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আলোচনায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর -বাংলাদেশ প্রতিদিন
নির্বাচিত হয়ে এলে আমরা একা দেশ চালাব না- এমন মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একটি জাতীয় সরকার গঠন করব। যারা আমাদের সঙ্গে আন্দোলনে ছিল তাদের নিয়ে দেশ পরিচালনা করা হবে। তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সন্দেহটা কোথায়? সন্দেহ কিন্তু আপনাদের ওপর আসতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, বিএনপির অগ্রাধিকার হচ্ছে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই আমরা সংস্কারের ৩১ দফা দিয়েছি। এখন নতুন যারা আসছেন তারা একেকজন একেক কথা বলে যাচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকারে যারা আছেন তারা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই। বিএনপি কি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে? না। তিনি বলেন, দ্রুত নির্বাচন দিলে দেশের অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকে হতাশ হয়ে পড়েছে। অনেকে বলাবলি করছে এ জন্যই কি সংগ্রাম করেছি? এতে আমাদের শত্রুরা সুযোগ নেবে। সরকার থেকে বিভিন্ন কথা বলা হচ্ছে। তবে আমি বলতে চাই, যে কোনো একদিকে ফোকাস দিন। পুলিশ প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচন দিন। বাকি সংস্কারগুলো নির্বাচিত হয়ে যারা আসবেন তারা করবেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছেন শেখ হাসিনা। দেশের সব অর্জন ১৫ বছরে শেষ করেছেন তিনি। শেখ হাসিনা যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করলেন, তখন আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারিনি। কেন পারলাম না? এটা তো সত্য, ১৫ বছর লড়াই-সংগ্রাম করে আমরা তাকে সরাতে পারিনি। ফাইনাল গোলটা কিন্তু ছেলেরা (শিক্ষার্থী) দিয়েছে, এটা স্বীকার করতেই হবে। তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের ইন্টেলিজেন্সের ভিতরে তথ্য ছিল না? তারা কি আগে ব্যবস্থা নিতে পারতেন না? আসলে সরকার এখনো স্টেবল হতে পারেনি। তাই বলছি নির্বাচন কমিশন ঠিক করে নির্বাচন দেন, একটি রোডম্যাপ ঘোষণা দেন। তাহলে মানুষের মনে আস্থা আসবে।