বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আজকের পর থেকে আমাকে কেউ দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক বলবেন না। তিনি বলেন, একজন সহকর্মী হিসেবে ও আপনাদের নেতা হিসেবে আমার অনুরোধ রইল- দয়া করে আমার নামের সঙ্গে আজকের পর থেকে দেশনায়ক, রাষ্ট্রনায়ক শব্দ ব্যবহার করবেন না। গতকাল রাজধানীর কাকরাইলের ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি শীর্ষক কর্মশালায়’ ভিডিও কনফারেন্সে তারেক রহমান এ কথা বলেন। বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির উদ্যোগে কর্মশালার ঢাকা বিভাগ অংশের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কর্মশালাটি পর্যায়ক্রমে দেশের সব বিভাগে আয়োজন করা হবে। প্রশিক্ষণ কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুলের সভাপতিত্বে কর্মশালা পরিচালনা করেন দলটির প্রশিক্ষণবিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব এ বি এম মোশাররফ হোসেন। কর্মশালায় নেতা-কর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। এ সময় তিনি ৩১ দফা, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ শাসন, বেকারত্ব দূর করাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের গার্মেন্ট ও রেমিট্যান্স শিল্পের বাইরে নতুন কর্মমুখর সেক্টর তৈরি করার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। আউটসোর্সিংয়ে অধিকাংশ মানুষ যেন বেশি যুক্ত হতে পারে সরকারিভাবে আমরা তা এনকারেজ করব। সংস্কার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, যখন দেশের কেউ এই বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করেনি, তখন বিএনপি ২৭ দফা দিয়েছিল। তিনি বলেন, বিএনপি এমন একটি দল- যারা দেশ পরিচালনা করেছে। আমরা হয়তো অনেক কিছু করতে পারিনি। হয়তো অনেক কিছু করেছি। এ সময় তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সরকারের অবদান ও সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করেন। তিনি ৩১ দফাকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। গ্রামপর্যায়ে ৩১ দফা নিয়ে উঠান বৈঠক করার আহ্বান জানান বিএনপির এই শীর্ষনেতা। তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের এক নেতার বক্তব্য উদ্ধৃত করে তারেক রহমান বলেন, জনগণের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি যদি না হয়, তাহলে যে সংস্কারই করি, কোনোটিই কাজে লাগবে না। রাজনৈতিক মুক্তি হচ্ছে জনগণের কাছে জবাবদিহি। এটি নিশ্চিত করতে হলে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কর্মসংস্থানের বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশে ১ কোটির বেশি বেকার রয়েছেন। আমাদের গার্মেন্ট ও রেমিটেন্সের বাইরে নতুন সেক্টর তৈরির সম্ভাবনা সৃষ্টি করার সুযোগ আছে। আমরা ইনশা আল্লাহ চেষ্টা করব, অতিদ্রুত না পারলেও অনেকাংশে সমস্যা কমিয়ে আনতে সক্ষম হব। তবে রাতারাতি সব হবে না। দলের এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশ সবার, আসুন প্রত্যেকের অবস্থান থেকে একটু একটু এগিয়ে আসি। প্রত্যেকে যদি চেষ্টা করি ইনশা আল্লাহ ভালো কিছু করতে সক্ষম হব। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান
অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচন দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এটি শুধু আমার কথা নয়, একজন রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহশ্রমিক, নারী শ্রমিককে জিজ্ঞাসা করুন। তারাও একই কথা বলবেন। মঈন খান বলেন, তরুণ সমাজকে জিজ্ঞাসা করুন, যারা বিপ্লব এনেছে, তারা কি ভোটার হয়ে একবারও ভোট দিতে পেরেছে? পারেনি। তাই ভোটের অধিকার ১২ কোটি ভোটারের মাঝে ফিরিয়ে দিতে হবে।