জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যাগত পরিবর্তন এবং প্রযুক্তির দ্রুত রূপান্তর মধ্য-২১ শতকের যুবসমাজের জন্য অন্ধকার ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত ইউনিসেফের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, শিশুরা একাধিক সংকটে জর্জরিত, যেমন জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও অনলাইন ঝুঁকি, যা ভবিষ্যতে আরও তীব্র হবে।
এ প্রতিবেদনে ২০৫০ সাল পর্যন্ত তিনটি প্রধান প্রবণতা তুলে ধরা হয়েছে, যা যদি এখনই নীতি নির্ধারকরা ব্যবস্থা না নেন, তাহলে শিশুদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে।
২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের মোট জনসংখ্যা হাজার কোটিতে পৌঁছাবে। এসময় শিশুদের সংখ্যা বর্তমান ২.৩ বিলিয়নের মতো থাকলেও, তাদের অংশীদারিত্ব কমে যাবে। উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের সংখ্যা ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসতে পারে, যা তাদের সামাজিক অধিকার ও প্রতিনিধিত্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যদিকে, উপ-সাহারা আফ্রিকার মতো দরিদ্র অঞ্চলে শিশুদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে। তবে এটি তখনই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি করবে, যদি এই শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া হয়।
বর্তমান হারে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ চলতে থাকলে, ২০৫০ সালের মধ্যে শিশুদের আট গুণ বেশি তাপপ্রবাহ, তিন গুণ বেশি বন্যা এবং ১.৭ গুণ বেশি দাবানলের সম্মুখীন হতে হবে।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অন্যান্য প্রযুক্তি নতুন উদ্ভাবনের সম্ভাবনা তৈরি করলেও, এটি ধনী এবং দরিদ্র দেশের মধ্যকার বিদ্যমান বৈষম্য বাড়াতে পারে। উন্নত দেশে ৯৫ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেলেও, দরিদ্রতম দেশগুলোতে এই হার মাত্র ২৬ শতাংশ।
ইউনিসেফের মতে, সবচেয়ে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের জন্য প্রযুক্তিগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে ব্যর্থ হলে, একটি সুবিধাবঞ্চিত প্রজন্ম আরও পিছিয়ে পড়বে। ইউনিসেফের এ প্রতিবেদন নীতি নির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানায়, যেন তারা শিশুদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রযুক্তিগত সুযোগ নিশ্চিত করে। পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেয়।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল