পৃথিবীর আকাশে মহাকাশপ্রেমীদের জন্য এক বিরল ঘটনা ঘটেছে। গ্রহাণু ২০২৪ পিটি৫, যাকে ‘মিনি চাঁদ’ বা ‘দ্বিতীয় চাঁদ’ বলা হচ্ছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে আটকা পড়েছিল। এটি প্রথম আবিষ্কার করা হয় ৭ আগস্ট নাসার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি গ্রহাণু শনাক্তকারী সিস্টেমে।
বাসের আকারের এই গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৭ লাখ ৬০ হাজার কিলোমিটার দূর দিয়ে চলাচল করেছে। যদিও এটি পৃথিবীর কাছাকাছি আসে, গ্রহাণুটির আকার ছোট এবং আলোকিত না হওয়ায় খালি চোখে দেখা যায়নি। কেবলমাত্র শক্তিশালী টেলিস্কোপ ব্যবহারকারীরাই এটিকে পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ৩৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এই গ্রহাণুটি আরজুনা গ্রহাণুপুঞ্জ থেকে এসেছে। এটি এমন একটি অঞ্চল, যেখানে সূর্য থেকে ৯৩ মিলিয়ন মাইল দূরে আদিম ধূলিকণার মতো উপাদান রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি হয়তো পৃথিবীর চাঁদ থেকে প্রাচীন কোনো সংঘর্ষে বিচ্ছিন্ন হওয়া একটি অংশ, যা আবার পৃথিবীর কক্ষপথে ফিরে এসেছে।
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আফ্রিকার সাটারল্যান্ডে নাসা-তহবিলপুষ্ট একটি শক্তিশালী টেলিস্কোপের মাধ্যমে মাদ্রিদের কমপ্লুটেন্স ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় এই গ্রহাণুটিকে শনাক্ত করেন।
‘মিনি চাঁদ’ বলতে এমন গ্রহাণু বা ধূমকেতুকে বোঝানো হয়, যেগুলো পৃথিবীর খুব কাছে এসে সাময়িক সময়ের জন্য মাধ্যাকর্ষণে আটকা পড়ে। তবে, অনেক সময় এগুলোকে মহাকাশে হারিয়ে যাওয়া স্যাটেলাইট বা রকেটের টুকরো বলেও শনাক্ত করা হয়েছে। ২০২৪ পিটি৫ তার এই সফর শেষে আবার অদৃশ্য হবে এবং এটি পুনরায় দেখা যাবে ২০৫৫ সালে। মহাকাশপ্রেমীরা এই বিরল ঘটনাকে স্মরণীয় বলে উল্লেখ করেছেন।
তথ্যসূত্র: NASA, Complutense University of Madrid, এবং The Metro-এর প্রতিবেদন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল