ঈদের আনন্দ মুসলমানদের জন্য সব সময়ই স্পেশাল হয়ে থাকে। পরিবেশের পরিবর্তনের কারণে এ ঈদ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঋতুতে হয়। এবার চৈত্র মাসের গরম হওয়ায় আমাদের খাবারের প্রতি একটু বাড়তি যত্ন নিতে হবে। বিশেষ করে তাপমাত্রা এখন অনেক বেশি, যে কারণে আমাদের শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অনেক ইলেক্ট্রোলাইট বের হয়ে যায়। সেই সঙ্গে খাবার হজমেও ব্যাঘাত ঘটতে পারে, যদি খাবার খাওয়ার নিয়ম মেনে না খাওয়া হয়। আমাদের প্রত্যেকের প্রতিদিন নির্দিষ্ট কিছু ক্যালরি এবং পুষ্টি চাহিদা রয়েছে যা নির্ভর করে ওজন উচ্চতা, লিঙ্গ শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদির ওপর।
খাবার গ্রহণ করার সময় আমাদের একটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে, সেটা হলো- খাবারটি সুষম কি না। এখন আমরা জেনে নিই ঈদের খাবার কেমন হবে সবকিছু মিলিয়ে ঈদের খাবার কেমন হবে : সারা মাস রোজা পালন করে ঈদের দিন থেকেই পরিবর্তনটা শুরু হয়। একটা নিয়ম থেকে অন্য নিয়মে যেতে গিয়েও আমাদের কিছুটা থামতে হবে। ঈদের দিনের খাবার অনিয়ন্ত্রিত হলে নানারকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে। যেমন- ডায়রিয়া, বদহজম, পেটে গ্যাস হওয়া ইত্যাদি। সেই সঙ্গে এবার গরম বেশি পড়াতে যাদের আগে থেকে উচ্চ রক্তচাপ, হার্টের রোগ ইত্যাদি রয়েছে তাদের জন্য খাবারের টাইপ এবং পরিমাণ ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। কেননা অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত বা ক্যালরিবহুল খাবার বেশি খাওয়ার কারণে এসব রোগ বেড়ে গিয়ে জটিল রোগের আশঙ্কা বাড়ে।
ঈদের সকালের খাবার : ঈদের দিন সকালে খাবার হবে তেলমুক্ত ফ্রেশ খাবার। যেমন রুটি, চিড়া, আলু, সেমাই বা পায়েশ-এগুলোর সঙ্গে যে কোনো দুটি ফল রাখা। ফলের ন্যাচারাল জুসও খুব উপকারী। সঙ্গে সবজি, সবজির সালাদ।
ঈদের দুপুরের খাবার : দুপুরের খাবারটি গ্রহণের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেহেতু এবার গরম অনেক বেশি সেহেতু তেল-মসলাযুক্ত খাবার কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। মসলা কম দিয়ে চিকেন রান্না করা, সঙ্গে ফল বা সবজির সালাদ, কাবাব করলে সঙ্গে শসা, লেটুস সালাদ রাখা। পোলাওর চাল নরমালই তেল ছাড়া রান্না করা এবং ড্রিংক হিসেবে টক দই দিয়ে বোরহানি, মাঠা, লেবুর পানি বা পুদিনা পাতা লেবুর শরবত। চিনির ব্যবহার তুলনামূলক কম করতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা চিনি ছাড়া খাবেন।
ঈদের বিকালের নাশতা : ঈদের বিকালে নরমাল ফল কয়েক রকমের, সঙ্গে বাদাম, সবজি বা চিকেন স্যুপ রাখা যেতে পারে। এর পাশাপাশি কাবাব বা চিকেন সালাদও খাওয়া যেতে পারে। ডিহাইড্রেশন ঠিক রাখতে ডাবের পানি, ফল বা ফলের জুস, স্যুপ খুব উপকারী।
ঈদের রাতের খাবার : রাতের খাবার তুলনামূলক হালকা হতে হবে। অতিরিক্ত পরিমাণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পরিমিত পরিমাণ খাবার গ্রহণ করতে হবে। সুষম হলে ভালো। অনেক সময় হালকা খাবার হিসেবে সালাদ আর যে কোনো প্রোটিন নিলেই হবে। এ ছাড়াও অল্প ভাত বা রুটি সঙ্গে নেওয়া যাবে। ঘুমানোর আগে যে কোনো একটি টক ফল রাখা। মনে রাখতে হবে খাবারের পাশাপাশি পানি গ্রহণ ঠিক রাখতে হবে। প্রতিদিন একজন সুস্থ মানুষকে দুই থেকে আড়াই লিটার পানি গ্রহণ করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা খাবার নিয়ে এসময় সতর্ক ও যত্নবান হতে হবে। খাবার খেতে হবে পরিমিতভাবে। কারণ কানো কিছুই অতিরিক্ত ভালো নয়।
-সামিয়া তাসনিম, পুষ্টিবিদ
ল্যাবএইড গুলশান, ঢাকা