অপ্রশস্ত বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে হতাহতের পাশাপাশি এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলোও মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বরিশালের গৌরনদী মহাসড়ক থানা সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮১টি দুর্ঘটনায় ১০৫ জন নিহত ও ২২০ জন আহত হয়েছেন। মহাসড়ক ছোট হওয়ায় ও যানবাহন বেড়ে যাওয়ায় প্রায় প্রতিদিনই ছোট ছোট অনেক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব খবর পুলিশ পর্যন্ত আসে না। মহাসড়কটি চার লেন বা ছয় লেন করা না হলে দুর্ঘটনা কোনোভাবেই কমানো যাবে না বলে জানিয়েছেন পুলিশসহ সংশ্লিষ্টরা।
গৌরনদী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার বিপুল হোসেন বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ পর্যন্ত ২৮টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে আটজনের প্রাণহানিসহ ৫৫ জন আহত হয়েছেন। মহাসড়ক থানার ওসি মো. আমিনুর রহমান জানান, ঈদ উপলক্ষে মহাসড়ক থানার ৫০ জন পুলিশ নতুন হাট থেকে ভুরঘাটা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। মহাসড়ক পুলিশ দুর্ঘটনা ও যানজট এড়াতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। মহাসড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ পাঁচটি এলাকাকে ব্ল্যাক স্পট গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড, ইল্লা, কটকস্থল, উজিরপুর উপজেলার সোনারবাংলা ও রামগতি এলাকায় বাড়তি টহল দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া গৌরনদীর বার্থী, টরকী, আশোকাঠি, মাহিলাড়া, বাটাজোর, উজিরপুর মোড়াকাঠি, সানুহার, জয়শ্রী এবং ইচলাদী অংশ ও মহাসড়কের অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ অংশের দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
সাকুরা পরিবহনের দক্ষিণাঞ্চলের অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মো. পলাশ হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার পর বরিশাল ঢাকা মহাসড়কে ফিটনেস ও রুট পারমিটবিহীন গাড়ি চলাচল বেড়েছে। ঈদের সময় তা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। মহাসড়কটি সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকায় অন্যরুটে চলাচলকারী বাস ও চালকরা এ সড়কে হরহামেশাই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছেন। এদের কারণে অভিজ্ঞ চালকরাও দুর্ঘটনায় পড়ে। এদিকে, দুর্ঘটনা রোধে মহাসড়কটি সম্প্রসারণ জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন গৌরনদী পৌর নাগরিক কমিটির সভাপতি মো. জহুরুল হক জহির। তিনি বলেন, বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। সবসময় আতঙ্কে থাকি, এই বুঝি কোনো দুর্ঘটনা ঘটছে। তিনি আরও বলেন, মহাসড়কটি সম্প্রসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও বেপরোয়া গতির যানবাহনগুলো আইনের আওতায় আনা, জনবহুল স্ট্যান্ডের ফুটপাত দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দোকান ও স্থাপনা উচ্ছেদ এবং থ্রি হুইলারসহ অবৈধ যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করতে হবে। তাহলেই দুর্ঘটনা কমবে।