কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে তৈরি হচ্ছে টুপি। এ উপজেলার গ্রাম থেকে সুই-সুতোর নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি বিভিন্ন ডিজাইন বা নকশাদার টুপি আজ দেশের গন্ডি পেরিয়ে জায়গা করে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে। দেশ ও দেশের বাইরে এ টুপির অনেক কদর। রঙিন সুতোয় সুসজ্জিত, হাতে তৈরি এসব টুপির চাহিদা প্রতিনিয়তই বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে পৃথিবীর ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় এ টুপির কদর বাড়ায় টুপি তৈরির কারিগররা ব্যস্ত। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার অনেক নারী এখন স্বাবলম্বী। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি নারীরা নিজেদের আত্মবিশ্বাসও গড়ে তুলেছেন। জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী গ্রামের মায়া বেগমের বাড়িতে দেখা যায়, ২০-৩০ জন নারী মনোযোগ দিয়ে সুই-সুতো হাতে নিয়ে নকশা ফুটিয়ে তুলছেন টুপির কাপড়ে। এখানেই দেওয়া হয় নারীদের টুপি তৈরির প্রশিক্ষণ। তারা এ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এখানে টুপি বানানোর কাজেরও সুযোগ পান। এই গ্রামে প্রায় ৪০ নারী এখন নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ডিজাইন বা নকশার টুপি তৈরি করছেন। আর এ টুপিগুলো দেশীয় বাজার ছাড়িয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ফলে এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নারীরা অনেক খুশি। টুপি মূল্য নির্ভর করে এর নকশা ও সূচিশিল্পের ওপর। দীর্ঘদিন ধরে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মায়া বেগম জানান, প্রতিটি টুপির জন্য ৮০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দেওয়া হয়। অন্য একজন খাদিজা বেগম তিন বছর ধরে এই কাজে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, আগে সংসারের খরচ চালানো খুবই কষ্টকর ছিল। কিন্তু টুপি তৈরির কাজ শেখার পর এখন নিজের আয় নিজে করতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। মাসে দুই থেকে তিনটি টুপি তৈরি করে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় হয়। ফলে এখন আমার সংসার চালানো অনেক সহজ হয়েছে। একই গ্রামের আরেক নারী উদ্যোক্তা আদরী বেগম বলেন, এর আগে আমি অভাবের কারণে দুশ্চিন্তায় থাকতাম। কিন্তু এখন ঘরে বসেই কাজ করতে পেরে সংসারে সচ্ছলতা এসেছে।