ঈদসহ বাঙালির বিভিন্ন উৎসবের অন্যতম আকর্ষণীয় খাবার সেমাই। বাজারে বিভিন্ন প্রকার সেমাইয়ের মধ্যে আলাদা কদর রয়েছে রূপগঞ্জের হাতের তৈরি চাক সেমাইর। স্বাদ ও গুণে এ সেমাই অন্যগুলো থেকে একটু আলাদা। সারা বছর চাক সেমাই তৈরি হলেও বছরের দুটি ঈদ যেন তাদের উৎপাদন মৌসুম। এখানে সেমাই তৈরিকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেকের। স্বল্প পুঁজি আর শ্রমে সেমাই তৈরির ব্যবসা লাভজনক হওয়ায় দিনদিন বাড়ছে উদ্যোক্তা। সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, রূপগঞ্জের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রায় ২৫-৩০টি পরিবার তৈরি করে সুস্বাদু চাক সেমাই। ময়দা, লবণ ও পানির মিশেলে হাতের ছোঁয়ায় তৈরি করা হয় এ সেমাই। তেল, চিনি বা কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার না করায় রূপগঞ্জের চাক সেমাইর চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। চারজন মানুষ সারা দিন কাজ করে তৈরি করতে পারেন ১০০ কেজি চাক সেমাই। ১০০ কেজি ময়দায় তৈরি হয় ৮৫-৯০ কেজি সেমাই। প্রতি কেজি সেমাই পাইকারি বিক্রি হয় ১১০-১২০ টাকায়। চাহিদা বেশি থাকায় সরাসরি বাড়ি থেকে কিনে নিয়ে যান পাইকাররা। অনলাইনে অর্ডার করে পার্সেল পদ্ধতিতে এ সেমাই যাচ্ছে ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। এবার ঈদ ঘিরে উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য ৫০ টন চাক সেমাই বিক্রি। উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম, কবির হোসেন ও গোলজার হোসেন বলেন, সারা বছরই এ সেমাইয়ের চাহিদা থাকে। তবে দুটি ঈদ ঘিরে উৎপাদনে থাকে বিশেষ টার্গেট। এ সেমাইয়ের এত চাহিদা যে, উৎপাদন করে বিক্রির জন্য ভাবতে হয় না। সেমাইয়ের কারিগর রোমান ও সোহেল মিয়া জানান, দীর্ঘদিন সেমাইয়ের মান ভালো রাখতে সেঁকে দেওয়া হয় কয়লার আগুনে। রূপগঞ্জের ইউএনও সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোক্তাদের জন্য সব সময় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।