কুতুবদিয়ার শুঁটকিপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা নেই। সাগর থেকে জেলেরা খালি হাতে ফেরায় কমেছে কর্মচাঞ্চল্য। এ পেশার মানুষেরা রয়েছেন জীবিকা সংকটে। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই দায় হয়ে পড়েছে ছোট ছোট শুঁটকি উৎপাদকদের। অথচ এই দ্বীপে উৎপাদিত শুঁটকির সুনাম রয়েছে জেলার সীমানা পেরিয়ে দেশ-বিদেশে। বিপুল সম্ভাবনা থাকলেও নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে এখানে শুঁটকি উৎপাদন কমছে। শুঁটকি পেশায় জড়িতরা জানান, অর্থ সংকট, সাগরে দেশীয় প্রজাতির মাছের স্বল্পতা, শুঁটকি তৈরি ও সরবরাহে সহায়তা না পাওয়ায় এ পেশা ছাড়ছেন অনেকে। শুঁটকি উৎপাদন কমতে শুরু করায় বহু পরিবার বেকার হয়ে পড়েছে। নতুন প্রজন্মদের মধ্যে এ পেশায় আসার আগ্রহ কম।
পরিবেশবাদী সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা’র) কুতুবদিয়ার আহ্বায়ক এম. শহীদুল ইসলাম জানান, দ্বীপের অধিকাংশ লোক সাগরে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। আগে সাগরে জেলেরা যে পরিমাণ মাছ পেতেন, বর্তমানে তা পাচ্ছেন না। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হচ্ছে। নয়তো মাছগুলো গভীর সাগরে জেলেদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কুতুবদিয়ার দুই পাশে তথা মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ এবং বাঁশখালী গন্ডামারা কয়লাবিদ্যুতের নিঃসরিত কার্বন এবং ক্ষতিকর প্রভাবে সাগরের মাছসহ জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাচ্ছে। জীবিকা সংকটে পড়ছেন জেলেরা। ক্ষতিগ্রস্ত জেলেদের ক্ষতিপূরণসহ তাদের পূণর্বাসনের বিষয়টি সরকারের নজরে আনার দাবি জানান তিনি। শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানান, সাগরে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। যে কারণে শুঁটকি উৎপাদনের প্রধান উপকরণে টান পড়েছে। এ পেশায় জড়িতরা সরকারি কোনো সহায়তাও পাচ্ছেন না। কুতুবদিয়া উপজেলা মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা নাজমুস সাকিব জানান, শুঁটকি তৈরি ও সরবরাহে সরকারি কোনো সহায়তা দেওয়া হয় না। তিনি আরও জানান, সমুদ্রে কাক্সিক্ষত মাছ মিলছে না। মৎস্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সমুদ্র এলাকা পরিদর্শন করবেন। যথাযথ কারণ উদঘাটন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তারা। তবে, এ সমস্যা কেটে যাবে আশাবাদী তিনি।