ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষ সোমবার ঘোষণা করেছে, অ্যাপ ট্র্যাকিং গোপনীয়তা নীতিসংক্রান্ত কারণে তারা অ্যাপলকে ১৫০ মিলিয়ন ইউরো (প্রায় ১৬২ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করেছে। এই ফিচারটি বর্তমানে ইউরোপের একাধিক দেশে তদন্তের আওতায় রয়েছে।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানিয়েছে, অ্যাপল তাদের অ্যাপ ট্র্যাকিং ট্রান্সপারেন্সি (এটিটি) সফটওয়্যার যেভাবে কার্যকর করেছে, তা ব্যবহারকারীদের ডেটা সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে ‘না প্রয়োজনীয়, না প্রাসঙ্গিক’। পাশাপাশি এটি তৃতীয় পক্ষের প্রকাশকদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
জরিমানার পাশাপাশি অ্যাপলকে সাত দিনের জন্য তাদের ওয়েবসাইটে এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ করতে হবে।
জার্মানি, ইতালি, রুমানিয়া ও পোল্যান্ডের কর্তৃপক্ষও এটিটিসংক্রান্ত তদন্ত শুরু করেছে, যেটিকে অ্যাপল গোপনীয়তা সুরক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে প্রচার করে থাকে। এই জরিমানা ইউরোপীয় নিয়ন্ত্রকদের কোনো মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক পদক্ষেপ।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ধরনের জরিমানার প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। অ্যাপল এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আজকের সিদ্ধান্তে হতাশ, তবে ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষ এটিটিতে কোনো নির্দিষ্ট পরিবর্তন আনতে বলেনি।’
অন্যদিকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এটি অ্যাপলের দায়িত্ব যে তারা নিয়ম মেনে চলবে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালে চালু হওয়া এটিটি ফিচারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অন্যান্য অ্যাপ ও ওয়েবসাইটে ট্র্যাকিংয়ের জন্য সম্মতি নিতে হবে। অনুমতি না দিলে সংশ্লিষ্ট অ্যাপ ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে না, যা লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সমালোচকরা বলছেন, অ্যাপল এই ব্যবস্থা ব্যবহার করে তাদের নিজস্ব বিজ্ঞাপন পরিষেবাকে এগিয়ে রাখছে এবং প্রতিযোগীদের সীমিত করছে। ফ্রান্সের প্রতিযোগিতা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এটিটি তৃতীয় পক্ষের অ্যাপগুলোর জন্য অতিরিক্ত সম্মতি জানানো বাধ্যতামূলক করেছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিরক্তিকর হয়ে উঠছে।
তদন্তে আরো উঠে এসেছে, অ্যাপলের সিস্টেম ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপন ট্র্যাকিং থেকে বের হওয়ার জন্য একবার নয়, বরং দুইবার অনুমতি দিতে বাধ্য করে। এতে ফিচারটির নিরপেক্ষতা ব্যাহত হচ্ছে এবং অ্যাপ প্রকাশক ও বিজ্ঞাপন পরিষেবা প্রদানকারীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/শআ