ঈদে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে যানজট না থাকায় ভোগান্তি ছাড়াই কর্মস্থলে ফিরছেন যাত্রীরা। বাস ভাড়া নিয়েও তেমন কোনো অভিযোগ করতে দেখা যায়নি যাত্রীদের। সবমিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রা ছিল স্বস্তির। তবে বাস মালিকরা বলছেন, খরচের টাকা তুলতেই তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। একদিকে আদালতের ভয়, অন্যদিকে জ্বালানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা।
জানা গেছে, প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবারও রাজধানীতে ফিরতে শুরু করছেন বগুড়ার মানুষ। তবে এবার মহাসড়কে যানজটের কোনো ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তিতেই ফিরছেন তারা। সেইসঙ্গে বাস ভাড়া নিয়েও তেমন কোনো অভিযোগ করতে দেখা যায়নি। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত পরিবহনে রাজধানীতে ফিরছেন অনেকেই।
যাত্রীরা বলছেন, এবারের ঈদযাত্রা ছিল গত বছরের তুলনায় অনেক মসৃণ এবং সুবিধাজনক। সড়কে যানজটের কোনো বড় সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। শনিবার (৫ এপ্রিল) ভোর থেকে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া, বনানী ও চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে মানুষের যাওয়ার দৃশ্য ছিল স্বাভাবিক। দীর্ঘদিন পর মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই কর্মস্থলে ফিরতে পারছেন। তবে ঠনঠনিয়া ও চারমাথা বাস টার্মিনালে দূরপাল্লর যাত্রীদের উপস্থিতি বাড়লেও চাপ কম ছিল। এই ঈদযাত্রায় বাস মালিকদের খুব ভালো অবস্থা ছিল না। তবে যাত্রীদের স্বস্তি দিতে পেরে তারা সন্তুষ্ট।
বগুড়া হাইওয়ে পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. শহিদ উল্ল্যাহ জানান, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের যাত্রীদের যানজটমুক্ত এবং নিরাপদ পরিবেশে ঢাকায় ফেরার জন্য ৪ এপ্রিল থেকে একটি বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ঈদের পর যেসব এলাকায় বেশি যাত্রী বাসে ওঠানামা করেন, সেই সব এলাকায় অতিরিক্ত টহল ও পিকেট ডিউটি মোতায়েন করা হয়েছে। ফলে ভোগান্তি ছাড়াই কর্মস্থলে ফিরছেন যাত্রীরা।
বগুড়া বাস মিনিবাস ও কোচ মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে ঢাকা মহাসড়কে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হুন্দাই কোচ চলাচল করে প্রায় ৩০টি। আর ননএসি কোচ চলাচল করে প্রায় শতাধিক। প্রতি বছর এসব গাড়ির মালিকরা রমরমা ব্যবসা করলেও এবারে ঈদে তার উল্টো চিত্র।
ঢাকা কল্যাণপুর এসআর কাউন্টারের ম্যানেজার আমিন নবী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, প্রতিটি কোচ বগুড়া থেকে ঢাকা আসা-যাওয়া করলে শুধু জ্বালানি তেল খরচ হয় ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়া গাড়ির ড্রাইভার, হেলপার, ও সুপারভাইজারকে পারিশ্রমিক বাবদ দেওয়া হয় ৩ হাজার ৫০০ টাকা। প্রতিটি এসি বাসে আসন সংখ্যা থাকে ৩৬টি। এসব যাত্রীদের জন্য প্রতি টিপে বিশুদ্ধ পানি বাবদ ৭০০ টাকা খরচ হয়। এ ছাড়া যমুনা সেতুতে টোল দিতে হয় ২ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে গাড়ির ব্যবসায় টিতে থাকাই কঠিন হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভয়।
তিনি আরও বলেন, এবার যানবাহনে বাড়তি চাপ নেই। ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে মানুষের ফেরার পথে কিছু অসাধু ব্যক্তি যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া আদায় করে থাকেন। এবার সেটার সুযোগ নেই। যাত্রীরা হয়রানি ছাড়াই কর্মস্থলে ফিরছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থী আসিফ রহমান রাহাত জানান, এবার ঈদযাত্রা ছিল অনেকটাই স্বস্তির। ঢাকায় ফেরার সময় তেমন ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। এছাড়া অধিক ভাড়াও গুনতে হয়নি। সড়কে যানজট না থাকায় সঠিক সময়ে আমি গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পেরেছি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই