ভারতের লোকসভায় বিতর্কিত ওয়াকফ বিল পাস মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আরো ক্ষমতাহীন ও নিরাপত্তাহীন করে তুলবে বলে মনে করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। একই সঙ্গে এই বিল পাসের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের পক্ষ থেকে তিনি এ মতামত দিয়েছেন।
বিবৃতিতে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ওয়াকফ বিল ভারতের সংবিধানবিরোধী ও ফেডারেল কাঠামোর পরিপন্থী। ভারতের মুসলমানদের নিঃস্ব করে তাদের সম্পত্তিতে সরাসরি হস্তক্ষেপের জন্যই এই বিল পাস করা হয়েছে। ভারতের লোকসভায় পাস হওয়া বিল মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এর মাধ্যমে মুসলমানদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। ভারতের এ বিল নতুন করে সংকট সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার ধ্বজাধারী ভারতকে মুসলিমশূন্য করার নীলনকশায় মেতে উঠেছে। এ আইনের মাধ্যমে মুসলিমদের স্বার্থে চরমভাবে আঘাত করা হয়েছে। মুসলমানদের সম্পত্তিতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় মোদি সরকার। নতুন করে দাঙ্গা বাধিয়ে মুসলমানদের হত্যার জন্য, ব্যাপক বিরোধিতা সত্ত্বেও বিলটি পাস করেছে বিজেপি সরকার।
তিনি আরো বলেন, এই বিলের মধ্য দিয়ে রাজ্যের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ওয়াকফ বোর্ডে অমুসলিমরাও সদস্য হতে পারবেন। এমনকি তারা বোর্ডের প্রধান নির্বাহীও হতে পারবেন। ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবহারের ভিত্তিতে স্বত্বাধিকারী হওয়ার বিধানও বাস্তবে বাতিল হয়ে যাবে। বর্তমানে ভারতের ওয়াকফ বোর্ডের অধীন জমির পরিমাণ আনুমানিক ৯.৪ লাখ একর।
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, এই বিশাল জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত আছে প্রায় ৮ লাখ ৭২ হাজার ৩৫১টি ধর্মীয় ও জনকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান। এই সম্পত্তির বাজারমূল্য লাখ কোটি রুপি। যা উপমহাদেশে মুসলিম সমাজের হাজার বছরের ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক অবদানের প্রতীক। এই বিলের মাধ্যমে সেই সম্পদের ওপর রাষ্ট্রীয় হিন্দুত্ববাদী দখল প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা স্পষ্ট। এটি কোনো আইনি সংস্কার নয়, বরং মুসলমানদের ধর্মীয় পরিকাঠামোকে ধ্বংস করে দেওয়ার হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদের নগ্ন রূপ।
বিডি প্রতিদিন/কেএ